বেটা ভার্সন

রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

ইউনেসকোর স্বীকৃতি পেল দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ

আরও পড়ুন

দেড় শ বছরের বেশি সময় ধরে কালের সাক্ষী হয়ে আছে ঢাকার কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ। ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি পেল জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর স্বীকৃতি।

ইউনেসকো এশিয়া-প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ডস ফর কালচারাল হেরিটেজ কনজারভেশনে ছয়টি দেশের নয়টি স্থাপনাকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এর মধ্যে ‘অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট’ ক্যাটাগরিতে স্বীকৃতি পেয়েছে কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ।

ঐতিহাসিক স্থাপনাটির অবস্থান কেরানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার কোন্ডা ইউনিয়নের দোলেশ্বর গ্রামে। দেড় শ বছরের পুরোনো মসজিদটির পুরোনো আদল ধরে রেখে নবাবি আমলের ঐতিহ্য বজায় রেখে সুনিপুণ হাতে সংস্কার কাজ করেছেন স্থপতি সাঈদ মোস্তাক আহমেদ।

দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে, এমনকি দেশ–বিদেশ থেকেও পর্যটকেরা কেরানীগঞ্জের মসজিদটি দেখতে আসেন। আধুনিক স্থাপনার এই মসজিদ পর্যটকের মনোযোগ কাড়ছে। এ কারণে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অনন্য এই স্থাপনা নিয়ে একাধিকবার ফিচার হয়েছে।

সংস্কারে ফিরেছে মসজিদের আদিরূপ

জানা গেছে, মরহুম দারোগা আমিনউদ্দিন আহাম্মদ বাংলা ১২৭৫ সনে (ইংরেজি ১৮৬৮, হিজরি ১২৮৫) নিজ উদ্যোগে অনন্য স্থাপত্যশৈলীর দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু করেন। জনশ্রুতি আছে, দারোগা আমিনউদ্দিন আহাম্মদ মসজিদটির নির্মাণে প্রথম উদ্যোক্তা হওয়ায় এটি ‘দারোগা মসজিদ’ নামে পরিচিত ছিল। তাঁর ছেলে মইজউদ্দিন আহম্মদ ছিলেন মসজিদের প্রথম মোতোয়ালি ছিলেন। মইজদ্দিন আহাম্মদ, তমিজউদ্দিন আহাম্মদ, করিমউদ্দিন আহাম্মদ, খিদির বক্স মিয়া ও আবদুর গফুর আহাম্মদ মসজিদটির জন্য জমি ওয়াক্‌ফ করেন।

মসজিদের সামনের সাইনবোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সহোদর খিদির বক্স ও কাদের বক্স এবং মইজউদ্দিন আহাম্মদের পরিবার বংশপরম্পরায় মসজিদটির নির্মাণ ও সংস্কার কাজে জড়িত ছিলেন। কাদের বক্সের নাতি ও হাফেজ মো. মুছার ছেলে তৎকালীন জাতীয় পরিষদের সদস্য হামিদুর রহমান মসজিদটির বর্ধিত অংশ ১৯৬৮ সালে নির্মাণ করেন। এরপর একাধিকবার মসজিদটি সম্প্রসারণ করা হয়। কালের আবর্তে এই মসজিদের অবকাঠামো বিলীন হওয়ার পর্যায়ে ছিল। মসজিদটিকে সংস্কার করে পুরোনো রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নেন স্থানীয় সাংসদ নসরুল হামিদ। তাঁর উদ্যোগে স্থপতি আবু সাঈদ এম আহমেদ মসজিদ অবকাঠামো ঠিক রেখে পুনঃসংস্কারের কাজ শুরু করেন। ২০১৮ সালে সংস্কারকাজ শেষ হয়। পুরোনো মসজিদের পাশেই নির্মাণ করা হয় নতুন আরেকটি মসজিদ। পুরোনো মসজিদটি এখন গ্রন্থাগার ও মক্তব হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ঢাকা-৩ আসনের সাংসদ এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘এই মসজিদ প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় আমাদের পূর্বপুরুষদের হাত ধরে। চার প্রজন্ম ধরে এই মসজিদ আমরা রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছি। নতুন করে যখন মসজিদটি নির্মাণ করা হয়, তখন পুরোনো মসজিদের আদল ঠিক রেখে পুনঃসংস্কার করাটা ছিল আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। আমার ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও নিজস্ব অর্থায়নে মসজিদটি পুনঃসংস্কার করা হয়েছে।’

নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘ইউনেসকোর পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে দোলেশ্বর হানাফিয়া জামে মসজিদ। এটি দেশের জন্য যেমন বিরাট সম্মানের, তেমনি আমার জন্য আনন্দের।’

সংবাদ বিভাগ
- Advertisement -spot_img
spot_img

সর্বশেষ নিবন্ধ