ব্যাট হাতে দারুণ করলো বাংলাদেশের মেয়েরা। শারমিন আখতার পেলেন সেঞ্চুরি। যা মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথম। সব মিলিয়ে দলীয় স্কোরটা দাঁড়ালো ৫ উইকেটে ৩২২ রান। বল হাতেও দারুণ করলো বোলাররা। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে দুরন্তরূপে দেখা গেল বাংলাদেশকে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রকে এক প্রকার উড়িয়ে দিয়েছে সালমারা।
আজ মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) জিম্বাবুয়েতে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ২৭০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ওয়ানডেতে মেয়েদের এটি সর্বোচ্চ ব্যবধানে জয়।
আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ করে ৫ উইকেটে ৩২২ রান। জবাবে ৩০.৩ ওভারে মাত্র ৫২ রানে গুটিয়ে যায় মার্কিন মেয়েরা। বাছাই পর্বে টানা দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী পাকিস্তানকে হারিয়েছিল রুমানা-ফারজানারা।
৩২৩ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের মেয়েরা। কোনো ব্যাটারই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। দুজন পান দুই অঙ্কের রান। টারা নরিস ১৬ ও অধিনায়ক সিন্ধু শ্রীহারসা করেন ১৫ রান। বাকিদের সবার রান ছিলল দশের নিচে। উজমা ইফতেখার ইনজুরির কারণে ব্যাট করতে পারেননি।
বাংলাদেশের হয়ে সালমা খাতুন, ফাহিমা খাতুন, রুমানা আহমেদ দুটি করে উইকেট পান। জাহানারা আলম পান এক উইকেটের দেখা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে অপ্রতিরোধ্য ছিল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। উদ্বোধনী জুটিতেই ৯৬ রান যোগ করেন মুর্শিদা খাতুন ও শারমিন আখতার। অল্পের জন্য ফিফটির দেখা পাননি মুর্শিদা। ৪৭ রান করে তিনি বোল্ড হন কানডানালার বলে। ৫৬ বলের ইনিংসে মুর্শিদা হাঁকান পাচটি চার। তবে এক পাশ আগলে রেখে রানের ফুলঝুড়ি ছোটাতে থাকেন শারমিন।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তার সাথে ছিলেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা। এই জুটি ভাঙে দলীয় ১৪৪ রানের মাথায়। ২৬ বলে ৩৩ রান করে রান আউট হন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চারের মার।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে বড় স্কোরের আভাস দেন শারমিন ও ফারজানা হক। এই জুটি দলকে নিয়ে যান ২৮১ রান পর্যন্ত। এরই মধ্যে মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়ে ফেলেন শারমিন। পৌঁছে যান তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে। মেয়েদের ওয়ানডেতে দেখা মেলে প্রথম সেঞ্চুরি। নরিসকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১১৭ বলে ১০০ করেন শারমিন।
বাংলাদেশের হয়ে আগের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড যৌথভাবে ছিল সালমা খাতুন ও রুমানা আহমেদের। ২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে আহমেদাবাদে অপরাজিত ৭৫ করেন সালমা। পরের ম্যাচে একই প্রতিপক্ষের সাথে একই ভেন্যুতে রুমানাও করেন ৭৫। শারমিনের নিজের আগের সর্বোচ্চ ছিল ৭৪। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কক্সবাজারে ইনিংসটি খেলেছিলেন ২৫ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার।
দলীয় ২৮১ রানের মাথায় ভাঙে শারমিন-ফারজানা জুটি। ৬২ বলে ছয়টি চারে ৬৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন ফারজানা। শেষের দিকে রান বাড়াতে গিয়ে ৪ রানে আউট হন রুমানা। রিতু মনি করেন ২। ১০ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন লতা মন্ডল।
তবে শারমিন ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, অটল। বাংলাদেশ যখন ৫ উইকেটে রেকর্ড ৩২২ রান করে ফিরছে, শারমিনের নামের পাশে অপরাজিত ১৩০ রান। ১৪১ বলের ইনিংসে শারমিন হাঁকাতে পারেননি অবশ্য কোন ছক্কা। তবে মেরেছেন ১১টি বাউন্ডারি। ওয়ানডে বাংলাদেশের এটি সর্বোচ্চ ইনিংস, ৫ উইকেটে ৩২২। হতাশ করার বিষয় হলো এই ম্যাচে বাংলাদেশের কোন ব্যাটার হাঁকাতে পারেননি একটি ছক্কাও। সব মিলিয়ে চার এসেছে ৩০টি। তার মানে ১২০ রান এসেছে বাউন্ডারি থেকে। বাকি ২০২ রানের মধ্যে অতিরিক্ত খাত থেকে এসেছে ২২। বাদ বাকি সিঙ্গেলস আর ডাবলস।