গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বন বিভাগের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে নির্মাণাধীন স্থাপনা থেকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ঢাকা বিভাগীয় বন বিভাগের কর্মকর্তা ও কালিয়াকৈর থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার কালিয়াকৈর রেঞ্জ কার্যালয়ের আওতাধীন মৌচাক বন বিট কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান মানিকের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ওই এলাকার মৃত দেলোয়ার মাস্টারের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য হেলাল খাঁন তার ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে টিনসেটের পুরাতন ঘর ভেঙ্গে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু করেন। গত ২৫ নভেম্বর খবর পেয়ে ওই বিট কর্মকর্তা ও তার ৩/৪ জন অফিস স্টাফ নিয়ে সেখানে যায় এবং ডিমার্কেশনের অজুহাতে তার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। অথচ দেখা গেছে চতুর্দিকে ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তি। তার জমির সাথে বনের জমির কোনো সম্পর্ক নেই। তারপরও তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেয় ওই বন কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, পাশের বনের জমিতে অল্প সময়ের জন্য নির্মাণসামগ্রী রাখায় বাধা ও যাতায়াতের রাস্তার ড্রেনের স্লাব ভেঙ্গে দেন বন বিভাগের লোকজন। এতে বেকায়দায় পড়েন অবসরপ্রাপ্ত ওই পুলিশ সদস্য।
এছাড়াও বন মামলা দিয়ে তাকে জেল খাটানোর হুমকিও দেন ওই বন কর্মকর্তা। পরে বাধ্য হয়ে তিনি বাদী হয়ে ওই বন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে গত ২৫ নভেম্বর কালিয়াকৈর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর সোমবার (২৯ নভেম্বর) সাবেক ওই পুলিশ সদস্য বাদী হয়ে একই ঘটনায় ঢাকা বিভাগীয় বন বিভাগ কর্মকর্তা বরাবর আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য হেলাল খাঁন জানান, ২০১৬ সালে রেকর্ডীয় ৩ শতাংশ জমি কিনে টিনসেট বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু পুরাতন বাড়ি ভেঙ্গে নতুন করে ভবন নির্মানের কাজ শুরু করলে বন বিভাগের লোকজন বাধা দিচ্ছে। এ সময় ওই বন কর্মকর্তা আমাকে জানায়, কাজ করলে দুই লাখ টাকা দিতে হবে। আমার জমির চতুর্দিকেও রেকর্ডের জমি থাকার পরও টাকা না পেয়ে আমার জমির সীমানা পিলার ও যাতায়াতের রাস্তার ড্রেনের স্লাব ভেঙ্গে ফেলে। এছাড়া টাকা না দিয়ে কাজ করলে মিথ্যা বন মামলায় জড়ানোর হুমকিও দেন ওই কর্মকর্তা। এর আগে ওই রাস্তার জন্য আমরা কয়েকজন মিলে ওই বন কর্মকর্তাকে ১৪ হাজার টাকা দেই।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মৌচাক বন বিট কর্মকর্তা মুশফিকুর রহমান মানিক চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, কাজ দিলে তো টাকা চাইব, কাজই দেইনি কিসের টাকা চাইব? বনের জমিতে মালামাল রেখে বন নষ্ট করছেন। এতে বাধা দেওয়ায় তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর রেঞ্জ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম দোলন জানান, ওই বিট অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। একজন লোক বলতেই পারে টাকা চেয়েছে, প্রমাণ লাগবে। তবে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তার সত্যতা মিললে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কালিয়াকৈর থানাধীন মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাসেল মিয়া জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি।