ইরানের সঙ্গে সৌদি আরব অধিক গঠনমূলক আলোচনা করতে চায়। কিন্তু তেহরান এখন পর্যন্ত এই আলোচনা নিয়ে ‘গেইম’ খেলছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আব্দাল্লাহ আল-মুয়াল্লিমি এই মন্তব্য করেছেন।
উপসাগরীয় অঞ্চলের চিরবৈরী দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সুন্নী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরব এবং শিয়াপন্থী ইরানের মধ্যে চলতি বছর সরাসরি আলোচনা শুরু হয়েছে। তেহরানের সঙ্গে পশ্চিমাদের পারমাণবিক চুক্তির পুনর্নবায়ন এবং জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় ইয়েমেন যুদ্ধের অবসানে বৈশ্বিক তৎপরতার মাঝে সৌদি এবং ইরানের ওই আলোচনা শুরু হয়।
আঞ্চলিক উত্তেজনার মাঝে ২০১৬ সালে তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব। তবে গত বছরের আলোচনা বেশ হৃদ্যতাপূর্ণ ছিল বলে জানায় রিয়াদ। সেই আলোচনার পর গত অক্টোবরে ইরানের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দুই দেশ বেশ ভালো দূরত্বে চলে গেছে।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) আরব নিউজকে দেওয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে আল-মুয়াল্লিমি বলেছেন, বৈঠকের পর বড় ধরনের কোনও ফল অর্জিত হয়নি। তিনি বলেন, আমরা এই অঞ্চলে ইরানের ক্ষমতাসীন সরকারের আচরণের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করতে চাই।
আল-মুয়াল্লিমি বলেছেন, এসব আলোচনায় ইরানিরা যতদিন খেলা চালিয়ে যাবে, ততদিন তারা কোথাও যেতে পারবে না। এই আলোচনায় ইরানিরা দীর্ঘ-মেয়াদী আচরণ প্রদর্শন করছে। কিন্তু আমরা এ ধরনের আলোচনায় আগ্রহী নই।
২০১৯ সালে সৌদি আরবের একটি তেল স্থাপনা আক্রান্ত হয় এবং এই ঘটনার জন্য ইরানকে দায়ী করে রিয়াদ। তবে তেহরান সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। তারপর থেকে এ দুই দেশের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। আর এ উত্তেজনা ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি জোটের অব্যাহত হামলায় আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
মুয়াল্লিমি বলেছেন, ইয়েমেনের সংঘাত জটিল বলে প্রমাণিত হয়েছে। কারণ হুথিরা সেখানে তাদের উপকারভোগী বিশেষ করে ইরানের কাছ থেকে ক্রমাগতভাবে অস্ত্র এবং গোলাবারুদের সরবরাহ পাচ্ছে।
ইয়েমেনের প্রায় ৭ বছর ধরে চলে আসা সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরব এবং ইরানের মধ্যকার প্রক্সি যুদ্ধ হিসেবে মনে করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে এ দুই দেশ।