মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান সংঘাতে এশিয়ার পরাশক্তি চীন কখনো ভয় পাবে না এবং উভয়পক্ষের জন্য উপকারী হলে পারস্পরিক সহযোগিতাকে স্বাগত জানাবে বেইজিং। চিরবৈরী দুই বিশ্ব শক্তির সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান চরম অবনতির মাঝে সোমবার (২০ ডিসেম্বর) চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই মন্তব্যটি করেছেন।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওয়াং ইর মন্তব্যে বলা হয়েছে, মার্কিন কৌশলগত ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সম্পর্কে সমস্যা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেছিলেন, যদি চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাত হয়, তাহলে চীন এতে ভয় পাবে না এবং শেষ পর্যন্ত লড়াই করবে। ওয়াং ই বলেছেন, প্রতিযোগিতায় কোনো ক্ষতি নেই। তবে এই প্রতিযোগিতা হতে হবে ইতিবাচক।
মহামারি করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি, বাণিজ্য, মানবাধিকার এবং তাইওয়ানের ওপর বেইজিংয়ের ক্রমবর্ধমান চাপসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিভেদের কারণে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সম্পর্ক বর্তমানে তলানিতে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, গত মাসে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে টেলিফোনে প্রায় তিন ঘণ্টারও বেশি সময় যাবত আলোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেই সময় তিনি দেশটিতে সংখ্যালঘু ও ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর দমনপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ শি জিনপিংকে জানিয়ে দেন।
টেলিফোনে আলাপকালে চীনা প্রেসিডেন্ট তাইওয়ানে কোনো ধরনের উসকানি দেওয়া হলে বেইজিং তার জবাব দেবে বলে জো বাইডেনকে সতর্ক করে দেন।
জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে বেইজিংয়ের ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে রয়েছে। এই অঞ্চলের জাতিগত উইঘুর মুসলিমদের সরকারি বন্দি শিবিরে আটকে রেখে নিপীড়ন, জোরপূর্বক শ্রমে বেইজিং নিযুক্ত করছে বলে বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে।
উইঘুর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় চীনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র অতীতে নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। সর্বশেষ গেল বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটে একটি আইন পাস হয়। যেখানে উইঘুর মুসলিমদের বাধ্যতামূলক শ্রমে নিযুক্ত করায় চীনের জিনজিয়াং প্রদেশ থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বরাবরের মতো প্রত্যাখ্যান করে আসছে চীন।