বরিশালে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা একাধিক ইটভাটায় অবাধে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। এতে একদিকে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে, অন্যদিকে ভাটার কালো ধোঁয়ায় আশপাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের নানা রকম স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি কৃষিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
সরেজমিন দেখা যায় বরিশাল সদর উপজেলার বেশকিছু ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। এসব ভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। বরিশালের বন্দর থানার চরকাউয়া ইউনিয়নের চরকরনজী গ্রামে গড়ে ওঠা মেসার্স খান ব্রিকস, রানীর হাটে সংলগ্ন মেসার্স নিপা ব্রিকস এবং মেসার্স আর এইচ বি ব্রিকস সহ তিনটি ইটভাটায় প্রতিদিন কয়েক শ মণ কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। কিছু ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে ড্রাম চিমনি। এতে ভাটার আশপাশের এলাকা সব সময় বিষাক্ত কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন থাকে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, লোকালয়ে গড়ে ওঠা এসব ইট ভাটার ধোঁয়ায় আশপাশের বাড়িগুলোর অনেক গাছ মরে গেছে। নারিকেল, সুপারি গাছে ফুল থেকে ফল ধরার কয়েক দিন পর তা ঝরে পড়ছে। অন্যান্য ফল গাছেরও একই অবস্থা। এসব ইটভাটা মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করেন না ভুক্তভোগীরা।
ছাড়পত্র না নিয়ে ইটভাটা চালানো এবং ভাটায় কাঠ পোড়ানোর বিষয়ে মেসার্স খান ব্রিকসের প্রোপ্রাইটর মোকলেচউর রহমান খান বলেন, ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদন করেছি। পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা কিছুদিন আগে ভাটা পরিদর্শন করে গেছেন। এখনো ছাড়পত্র পাওয়া যায়নি।
মেসার্স আর এইচ বি ব্রিকসের প্রোপ্রাইটর হারুন অর রশিদ হাওলাদার বলেন, ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদফতর ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদন করেছি। পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা কিছুদিন আগে ভাটা পরিদর্শন করে গেছেন এবং বৈধ ভাবে ইট পোড়ানোর পরামর্শ দিয়ে গেছেন।
বর্তমানে আমার আর্থিক সমস্যার এবং কয়লার দাম বাড়ার কারণে কাঠ দিয়ে ইট পোড়াতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালক (বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়) মো. আবদুল হালিম বলেন, বরিশালের অবৈধ ইটভাটা গুলোতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অভিযানে পরিচালনা করা হবে এবং সকল অবৈধ ইটভাটা ধ্বংস করা হবে।